পরীক্ষার খাতায় লেখার উপরেই নির্ভর করেই মান যাচাই করা হয়। মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও পরীক্ষার খাতায় সঠিকভাবে উপস্থাপনার অভাবে কম নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিচে পরীক্ষায় ভাল করার জন্য কিছু নিয়ম আলোচনা করা হলো ।
পরীক্ষার আগের রাতের পড়াঃ
পরীক্ষার আগের দিন রাতে খুব বেশি রাত করে পড়ালেখা করা উচিৎ না। নতুন কোন টপিক শুরু না করে পূবের্র পড়াগুলো অধ্যয়ন করা উচিৎ। অনেক রাত জেগে পড়ার কারনে পরীক্ষার সময় ক্লান্তি অনুভব হতে পারে এবং স্বরণ শক্তি হ্রাস পেতে পারে।
পরীক্ষার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ ও মনে করে পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াঃ
পরীক্ষার প্রয়োজনীয় কলম, পেন্সিল, সাইন পেন, স্ক্যাল, ক্যালকুলেটর, প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড সহ অনুমোদিত অন্যান্য সরঞ্জাম মনে করে নিয়ে যেতে হবে। অতিরিক্ত কলম নিয়ে ইত্যাদি নিয়ে যাওয়া উচিত। এতে একটি সমস্যা হলে অন্যটি দিয়ে কাজ করা যাবে। প্রয়োজনে সরঞ্জামগুলো পরীক্ষা করে, দেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।
সঠিক সময়ে উপস্থিত হওয়াঃ
পরীক্ষার ২০-২৫ মিনিট কেন্দ্রে আসা উচিৎ, আর পরীক্ষা কেন্দ্র দূরে হলে আরও কিছু বাড়তি সময় নিয়ে আসতে হবে, পথে কোন সমস্যা (জানজট ইত্যাদি) হলে যাতে সমস্যা না হয়।
খাতায় মার্জিন টানা
খাতা দেয়ার পর এবং প্রশ্ন পাওয়ার পূবের্র সময়টাতে কিছু কাজ করতে হয়। খাতা সুন্দর করে মার্জিন টানতে হবে। পেন্সিল দিয়ে মার্জিন টানা ভাল। খাতায় ভাজ করে কোন দাগ না দিয়েও মার্জিন চিহ্নিত করা যায়। অনেকে খাতায় পৃষ্ঠানম্বর যুক্তও করে।
প্রশ্নটির সম্পূর্ণ অংশ পড়া
প্রশ্ন দেয়ার পর প্রশ্নটি সম্পূর্ণ অংশ পড়া উচিৎ। প্রশ্নগুলো কঠিন মনে হলেও হতাশ হওয়া যাবে না। আমি দেখেছি যে প্রশ্নটি প্রথমে কঠিন মনে হয় তা একটু পড়েই সহজ মনে হতে থাকে।
প্রশ্ন বাছাইঃ
অধিকাংশ পরীক্ষায়ই অতিরিক্ত প্রশ্ন থাকে – তা থেকে বাছাই করে লিখতে হবে। সবচেয়ে ভাল জানা উত্তরের প্রশ্নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আবার ভালভাবে জানা দুটি প্রশ্ন থেকে একটি বাছাই করতে হলে ভেবে দেখতে হবে-কোন প্রশ্নের উত্তরে বেশি নম্বর পাওয়া যেতে পারে। প্রমান করা, গানিতিক যুক্তি বা চিত্রসহ অলোচনার প্রশ্নের উত্তরে ভাল নম্বর পাওয়া যায়। তাছাড়া সময় কম থাকলে অপেক্ষাকৃত কম সময়ে উত্তর দেয়া যায় এরকম প্রশ্ন বাছাই করা উচিৎ। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে লেখা শুরু করা ভাল।
সময় বন্টনঃ
প্রশ্নগুলোর মান ও ধরনের উপর ভিত্ত করে কত সময়ে কোন কোন প্রশ্নের উত্তর দেয়া শেষ হবে তার একটি হিসেব মনে রাখতে হবে। মাঝে মাঝে সময়ের সাথে লেখার গতির হিসেব করে এগিয়ে যেতে হবে। একটি প্রশ্নের বিশাল বিবরণ লিখতে গিয়ে অন্য প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় না পাওয়ার চেয়ে দূঃখের কি আছে !
খাতার সাজ-সজ্জাঃ
- সাধারনের মধ্যে সুন্দরভাবে সাজাতে হবে ।
- হরেকরকম রং ব্যবহার করা যাবে না। শুধু কালো আর নিল কালির কলম ব্যবহার করা যেতে পারে।
- প্যারা করে আলোচনা গুলো লোখা উচিৎ।
- সম্পূর্ণ খাতায় একই রকম লেখার মান বজায় রাখতে হবে। যেমনঃ প্রশ্নের নম্বরের লেখার রঙ, শিরোনামের নিচের দাগ, প্যারার ডান পাশে খালি অংশের পরি মান ইত্যাদি সম্পূর্ণ খাতায় একই ধারা বজায় রাখতে হবে।
- প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের নিচে একটি/দুটি দাগ টেনে দেওয়া যেতে পারে যাতে পরীক্ষক বুঝতে পারে উত্তর দেয়া শেষ।
চিত্রের ব্যাপারেঃ
- চিত্র অবশ্যই পেন্সিল দিয়ে আঁকতে হবে।
- ঘষামাজা করে বা বারবার মুছে আবার চিত্র আঁকলে চিত্রটির সৌন্দর্য নস্ট হতে পারে।
- প্রয়োজনীয় অংশ চিহ্নিত করা, চিত্রের নম্ব ও চিত্রের বিষয়টি চিত্রের নিচে লিখে দিতে হবে।
- বিষয়বস্তুর সাথে অসামঞ্জস্য চিত্র দেয়া যাবে না।
একইরকম গতি বজায় রাখাঃ
লেখার একইরকম গতি বজায় রাখা উচিৎ। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রথম দিকে খুবই ধীরে ধীরে উত্তর লিখে আর শেষের দিকে রকেট গতিতে ছুটে চলার চেস্টায় হাতের লেখা অনেক অসুন্দর হয়ে যায়।
Leave a Reply