সাংবাদিকদের একটি অংশ বাদ দিয়ে নির্বাচন ছাড়াই জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের অবৈধ কমিটি ঘোষণা হলেও স্বীকৃতি মেলেনি কোথাও। এ নিয়ে চরম বিব্রত অবস্থায় আছেন ওই কমিটির কয়েকজন। গত ৭ দিন পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ কোনো সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা তাদের অভিনন্দন জানায়নি।
অন্যদিকে অপর অংশের নেতারা দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার বিষয়টি সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
জানা যায়, কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর তাদেরকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অভিনন্দন জানিয়েছেন এমন তথ্য দিলেও পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠন তাদেরকে অভিনন্দন জানায়নি। ঢাবি, জবি, রাবি, শাবিপ্রবি ও ইবিসহ কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সম্পাদক অভিনন্দন জানায়নি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের একাংশের এমন মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য তারা তীব্র নিন্দা জানান। অপর দিকে ওই অবৈধ কমিটিকে বাতিলের দাবিতে জাবি প্রেসক্লাবের একাংশের সাথে সহমত পোষণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অবৈধ উপায়ে নির্বাচন ছাড়াই জালিয়াতির মাধ্যমে গঠিত কমিটির সভাপতি তানজিদ বসুনিয়া বিভিন্ন সংগঠনের কাছে বৈধতার জন্য ধরনা দিলেও কোন সংগঠনই তাকে সমর্থন দেননি। কোন সংগঠনের স্বীকৃতি না পাওয়ায় সর্বশেষ ৭ মে উপাচার্যের কাছে ধরনা দেন তারা। নিয়ম অনুযায়ী কোন সংগঠনের কমিটি গঠন হলে উপাচার্যের সঙ্গে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। কিন্তু এই অবৈধ কমিটির নেতারা কয়েকবার দেখা করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। পরে গত রবিবার সকল থেকে সন্ধা পর্যন্ত অপেক্ষা শেষে সন্ধ্যায় উপাচার্য অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রশাসনিব ভবনের সিঁডিতে জোর করে ফুল দেন এবং কমিটির স্বীকৃতি দাবি করেন। কিন্তু উপচার্য তাদের ফুল গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে।
এদিকে অবৈধ কমিটির বৈধতা নিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘নতুন কমিটি গঠন’ শীর্ষক সংবাদ প্রেরণ করলেও দেশের কোন জাতীয় দৈনিকে ওই সংবাদ ছাপানো হয়নি। এমনকি ওই অবৈধ কমিটিতে স্থান পাওয়া ব্যক্তিদের কর্মরত দৈনিকেও কোন সংবাদ আসেনি।
এর আগে গত ৩ মে মধ্যরাতে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে’ উল্লেখ করে স্টাটাস দেন জাবি প্রেসক্লাবের ২০১৫-১৬ মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি সভাপতি রিজু মেল্লা, অবৈধ কমিটির সভাপতি পদ পাওয়া তানজিদ বসুনিয়া এবং অবৈধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া আব্দুল্লাহ শুভ। কিছু ব্যক্তি নির্বাচনে জালিয়াতির খবর না জেনেই ভুল বসত তাদের অভিন্দন জানান। পরবর্তীতে গণমাধ্যমে অবৈধ উপায়ে কমিটি ঘোষণার খবর প্রকাশ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু সকল সংগঠন অভিন্দন জানানো থেকে বিরত থাকেন। অনেকেই তাদের অভিনন্দন প্রত্যাহার করে নেন।
Leave a Reply