এক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীকে প্রমোশন দিলে মামলা করবে দুদক

শিক্ষার মান কমে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।Dudok

২৪ জুলাই রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের শিক্ষার মান কমে গেছে। সম্প্রতি ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে এমন- বাচ্চারা স্কুলে গেলেই পাস হয়ে যায়। তাদের পড়ার টেবিলে বসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। যদি কোনো স্কুলে পরীক্ষায় এক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ কোনো শিক্ষার্থীকে উপরের ক্লাসে প্রমোশন দেওয়া হয়, তাহলে আমরা মামলা করব।

তার যুক্তি, ওইভাবে এক শ্রেণি থেকে উপরের শ্রেণিতে ‘প্রমোশন’ দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘ক্ষমতার অপব্যাবহার’ করা হয়। তেমনিভাবে যেসব চিকিৎসক সরকারের বেতন নিয়ে গ্রামে কাজ করেন না- এটাও ক্ষমতার অপব্যাবহার। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হবে।

দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী সাংবাদিকদের পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মত বিনিময় করবে কমিশন।

দুদক কমিশনার নাসিরউদ্দিন আহমেদ, দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সারোয়ার, টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোরের সম্পাদক নঈম নিজাম, দৈনিক কালের কন্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, একাত্তর টিভির সিইও মোজাম্মেল হক বাবু মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সভায় বলেন, চলতি বছরের শুরুতেই দুদক ব্যাংকিং, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য– এই তিন খাতে গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যাংকিং সেক্টর, বিশেষ করে প্রাইভেট ব্যাংকগুলোতে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে পাচার হয়েছে। পত্র-পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রচুর সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। আমরা সরকারি ব্যাংকগুলোর দুর্নীতি যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান করছি, তেমনি বেসরকারি ব্যাংকগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে মনে রাখতে হবে যে সেখানে জনগণের টাকা থাকে।

জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিকে ‘বৈশ্বিক সমস্যা’ হিসেবে তুলে ধরে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতির অর্থই জঙ্গিবাদে যাচ্ছে। দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ দুটোই বর্তমানে বৈশ্বিক সমস্যা এবং এ ‍দুই সমস্যার মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। দুর্নীতির অর্থই জঙ্গিবাদে ব্যবহৃত হচ্ছে।

অর্থনৈতিক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ- এই দুই সমস্যাকে সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রতিহত করতে না পারলে কেউ নিরাপদ থাকবে না বলে মন্তব্য করেন দুদক প্রধান। বিশ্বের অনেক দেশের মত বাংলাদেশেও সাম্প্রতিক কয়েকটি জঙ্গি হামলার পর জঙ্গি অর্থায়নের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। গত ১২ জুলাই সিঙ্গাপুরে গ্রেপ্তার চার বাংলাদেশিকে জঙ্গিবাদে অর্থায়নের অভিযোগে দুই থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত। এছাড়া দেশে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে কাজ করছে এমন কয়েকশ প্রতিষ্ঠান জঙ্গিবাদে অর্থ লগ্নি করছে বলেও সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

সূত্রঃ দৈনিক শিক্ষা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *