প্রতিটি শিশু যেমন খুব ভালো পরিবারে জন্মগ্রহন করতে পারে না আবার সবাই একেবারে খারাপ পরিবারে জন্মায় না। এখানে ভালো বলতে বলতে চায়ছি যে পরিবারের সদস্যরা শিক্ষিতো খারাপ বলতে বোঝাচ্ছি যেখানে শিক্ষার আলো নেই। প্রত্যেকটি ছেলেমেয়ে যখন ছোট থাকে তখন তারা তাদের মূল শিক্ষাটা পেয়ে থাকে পরিবার থেকে। একেবারে ছোট বেলায় আমি যাবনা কারন আমার লেখার মুল বিষয়টা থাকবে গদ্য ও পদ্যের গুরুত্বটা একটু আলকপাত করা।
বেশ ছোট থাকতেই অর্থাৎ সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীতে থাকতেই অনেকে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলকে চিনতে শুরু করে। এই চেনাটা দুই রকম এক তারা নির্দিষ্ট পাঠ্য বইয়ের সিলেবাস থেকে তাদের জানতে পারে অন্যদিকে এই লেখকদের সাথে কারো কারো পরিচয় ঘটে তাদের পরিবার থেকে।
সেক্ষেত্রে আমি আগেই বলেছি যে ভালো পরিবারে বেড়ে উঠলো সে আগে থেকেই ছোটগল্পের মত বইয়ের দেখা পেল আর যে দেখা পেল না সে গতানুগতিক শিক্ষাবাবস্থার উপরই নির্ভরশীল হয়ে থাকলো। পরিবার থেকে সিলেবাসের মাধ্যমে এদের সাথে দেখা হওয়া ছাত্রের সংখ্যায় এখন বেশি।
এখানে বলে রাখা দরকার প্রতিটি মানুষের জীবনে তার মানবিক মূল্যবোধ ও মনুষ্যত্তের বিকাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এটা বুঝতে পারা শুরু হয় সেকেনডারী লেবেল থেকে এবং তার পূর্ণ বিকাশ লাভ পায় হাইয়ার সেকেনডারী লেভেল এ।
তাই এস এস সি ও এইচ এস সি লেভেলটা এতটা গুরুত্বপূর্ণ।
রবীন্দ্রনাথের ‘ফটিক’ না পড়লে যেমন কৈশোর মনে আবেগ আন্দোলিত করবে না ঠিক তেমনি ‘মাদার ইন ম্যানভিল’ না পরলে এক অসহায় শিশুর প্রতি মমত্ববোধের যে দুর্নিবার টান তা অনুধাবন করা যাবে না। এই দুটি পাঠ্য এস এস সি ও এইচ এস সি লেভেল এ ছিল আমার সময়। আর এদের সাথে আমার পরিচয় ওই সিলেবাসের মাধ্যমেই কারণ এক্ষেত্রে আমিও ওই শিশুদের দলে যারা পরিবার থেকে অনেক কিছুরই দেখা পায়নি।
সেখানে আমার আক্ষেপ নেয় তবে কষ্ট হয় যখন দেখি কমিউনিকেটিভ এর নামে শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে এইসব গল্প ও কবিতা ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। আর এগুলো যদি হারিয়ে যায় তবে সুখ,দুঃখ, মায়া , আবেগ, সহানুভূতি, শ্রোদধাবোধ এগুলোর লালন ও ধারন একটা ছাত্রের ভিতরে আসবে কি করে। অথচ উপরে বিবৃত প্রতিটি বিষয় আমাদের বাঙালি জাতির বহুবছরের সম্পদ। এগুলো না থাকলে একজন মানুষের প্রকৃত বিকাশ সম্ভব কিনা আমার জানা নেই।
একটি ছেলে অথবা মেয়ে যদি তার শিক্ষাব্যবস্থা থেকে এই জিনিষগুলো আয়ত্ত করতে না পারে তাহলে তার মতো দুর্ভাগ্য আর দুইটি নেয়।
সেক্ষেত্রে অনেকে তার পারিবারিক পরিবেশের কারনে হয়তো এসব গুনাবলি তার পরিবারের কারনে পেয়ে থাকতে পারে কিন্তু অধিকাংশেরই সেই সৌভাগ্য হয় না কারন এসব সাহিত্যের জন্য তাদেরকে এই সিলেবাসের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। তাই কমিউনিকেটিভ এর পাশাপাশি আমাদের সমৃদধ সাহিত্ত্যের গল্প , কবিতা,উপন্যাসকে সিলেবাসের ভিতরে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তা না হলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এক আবেগ , অনুভূতিহীন জড় পদার্থ হয়ে যাবে যেখান থেকে তাদেরকে বের করে আনা হয়ে যাবে এক বড় চ্যালেঞ্জ।
– অরণ্য সৌরভ
সরকারী সফর আলী কলেজ
আড়াইহাজার,নারায়নগঞ্জ।
Leave a Reply