‘হ্যাকার তৈরির বিজ্ঞাপন’ দিয়ে ফেঁসে যাচ্ছে সাইফুর’স কোচিং সেন্টার

“English-এর ভুলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকা হ্যাকারদের হাতছাড়া!”

“হ্যাকিংকৃত ডলার শ্রীলংকাতে স্থানান্তরের সময় `Foundation’ শব্দকে `Fandation’ লেখাতে বিদেশি Deutsche ব্যাংকের সন্দেহ হয়। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকেকে জানালে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এই ২০ মিলিয়ন ডলার স্থানান্তর বন্ধ করে দেয়।”

“একইভাবে ইংরেজিতে দুর্বলতার কারণে… MBA, অফিসার, Lawyer (এমনকি দক্ষ হ্যাকার!) প্রভৃতি হতে হলে reading, রাইটিং, Speaking, লিসেনিং ও spelling সবকিছুতেই ভালো হওয়া জরুরি!”

Saifurs+Ad

উপরের কথাগুলো সম্প্রতি সাইফুর’স কোচিং সেন্টার তাদের একটি বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেছে। আর এই বিজ্ঞাপন প্রচার করেই ফেঁসে যাচ্ছে কোচিং সেন্টারটি।

ইংরে‌জি শিক্ষার নামে হ্যাকার বানিয়ে দেওয়ার উৎসাহ প্রদান করা ‌বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য সাইফুর’স কো‌চিং সেন্টারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে সরকার।

আসন্ন এইচএস‌সি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ২৩ মার্চ ২০১৬ তারিখ বুধবার স‌চিবালয়ে সভার শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমেরিকায় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে প্রযুক্তিগত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে টাকা চুরি করেছে। প্রযুক্তি কার হাতে পড়বে সেটা বড় বিষয়।

সাইফুর’স নামে একটা বিখ্যাত কোচিং সেন্টার আছে। এই কোচিং সেন্টার একটা বিজ্ঞাপন দিয়েছে। সেই বিজ্ঞাপনে তারা বলেছে ভালো ইংরেজি না জানতে পারলে ভালো লেখাপড়া করতে পারবে না … এমনকি ভালো হ্যাকারও হতে পারবে না।

দেখেন, হ্যাকার হওয়ার জন্যও তার কাছে গিয়ে পড়তে হবে! বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, এটা অবশ্যই বে-আইনি, (এ ধরনের বিজ্ঞাপন) দিতে পারে না। আমরা তার (সাইফুরস) বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

সাইফুরস এই বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, “তারা ভালো চোর বানাতে চাইছে। এ রকম লোকের বিরুদ্ধে যদি আমরা সোচ্চার না হই তাহলে আমরা কী করে থাকব সমাজে?”

কোচিং সেন্টারগুলোকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, “এরা এই রকম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এদের বিরুদ্ধে কখনও আমরা সহনশীল হতে পারি না। তারা আমাদের ছেলেমেয়েদের প্রলোভন দেখাচ্ছেন ভালো ইংরেজি শিখলে ভালো চোর হতে পারবা, ভালো করে হ্যাকিং করতে পারবা।

চুরি শেখানোর বিজ্ঞাপন দিয়ে বলেছে ভালো চোর বানাবে”।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত সাইফুর’স কোচিং সেন্টারের ওই বিজ্ঞাপনের ফটোকপি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সাইফুর’স কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মামলা বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবে বলেও কর্মকর্তারা জানান।
উক্ত সভায় শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন, শিক্ষা ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, পুলিশ, র‌্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ওই বিজ্ঞাপন সম্পর্কে জানতে চাইলে সাইফুরস কোচিং সেন্টারের মহাব্যবস্থাপক আশরাফ উদ্দিন জুয়েল একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, “আমাদের অন্য কোনো ইনটেনশন ছিল না। বিজ্ঞাপনে ইংরেজি শেখার গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছি মাত্র। এনিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হলে, কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে স্যরি বলাই যুক্তিযুক্ত মনে করি।”





About লেখাপড়া বিডি ডেস্ক 1515 Articles
লেখাপড়া বিডি বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা বিষয়ক বাংলা কমিউনিটি ব্লগ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*