বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৮০ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করেন। আর আট শতাধিক সরকারি অফিসে দাপ্তরিক কাজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার হচ্ছে।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মচারীদের করণীয় ও বর্জনীয় নির্ধারণ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, দাপ্তরিক যোগাযোগ ও মতবিনিময়, সমস্যা পর্যালোচনা ও সমাধান, জনসচেতনতা ও প্রচারণা, নাগরিকসেবা সহজ করা ও উদ্ভাবন, সিদ্ধান্তগ্রহণ ও নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ, জনবান্ধব প্রশাসন ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং সেবাগ্রহীতার অভিযোগ নিষ্পত্তিতে সরকারি অফিসগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট পরিচালনার নির্দেশনায় বলা হয়, অ্যাকাউন্টে কোনো ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করা যাবে না। প্রতিষ্ঠানের কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা তিন থেকে পাঁচজনের একটি মডারেটর দল থাকবে।
সরকারের কর্মচারীদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টকে এই নির্দেশনার বাইরে রাখা হলেও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট পরিচালনায় দায়িত্বশীল আচরণ ও অনুশাসন মেনে চলতে নির্দেশনা এসেছে।
এছাড়া কনটেন্ট ও বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যাগিং না করতেও সরকারি কর্মচারীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মডারেটরকে তাদের পেইজ সপ্তাহে কমপক্ষে দুইবার হালনাগাদ করতে হবে। জাতীয় ঐক্য ও চেতনাপরিপন্থি কোনো কনটেন্ট প্রকাশ করা যাবে না।
এছাড়া কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে বা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি পরিপন্থি কোনো কনটেন্টও প্রকাশ করা যাবে না।
“বাংলাদেশে বসবাসকারী আদিবাসী, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক বা হেয় প্রতিপন্নমূলক কনটেন্ট প্রকাশ করা যাবে না।”
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে হেয় প্রতিপন্ন করে এবং লিঙ্গ বৈষম্য বা এ সংক্রান্ত বিতর্কমূলক কোনো কনটেন্ট প্রকাশ করা যাবে না।
জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কনটেন্ট প্রকাশেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশিকা অনুযায়ী, সরকারি প্রতিষ্ঠানকে তিন মাসে একবার নিজ দপ্তরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের অগ্রগতি ও কার্যকারিতা পর্যালোচনা করতে হবে।
“বছর শেষে মূল্যায়নের ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবহারকারীকে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার বা স্বীকৃতির ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।”
সেরা পোস্ট, সেরা কমেন্ট, সেরা পেইজ, সেরা নাগরিক সমস্য উপস্থাপক, সেরা সমাধান এবং সেরা প্রচারকে বিবেচনায় নিয়ে পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
এর আগে গত ৪ নভেম্বর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানিয়ে নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিজের ফেইসবুক পাতায় ‘একান্ত ব্যক্তিগত’ কোনো বিষয় প্রকাশে নিষেধজ্ঞা রয়েছে।
Leave a Reply