বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের নতুন নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখ শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়েছে শুধু নতুন শিক্ষক নিয়োগে এই নীতিমালা প্রযোজ্য হবে। অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সুপার, সহকারি প্রধান শিক্ষকসহ যে সকল পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে সেইসব পদে জন্য নতুন নীতিমালা কার্যকর হবে না।
চলতি বছরের ১১ নভেম্বর মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পরিপত্রটিও বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষক নিয়োগে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল তা বাতিল করা হলো।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, প্রত্যেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান সংশ্লিষ্ট ম্যানেজিং কমিটি -গভনিং বডির অনুমোধন ক্রমে পরবর্তী পঞ্জিকা বছরে তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়োগযোগ্য পদের একটি চাহিদাপত্র উপজেলা/থানা মাধ্যামক শিক্ষা অফিসারের নিকট প্রেরণ করবেন।
তিনি প্রাপ্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাহিদা একীভূত করে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে একটি সংকলিত/সমন্বিত চাহিদাপত্র জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট প্রেরণ করবেন। জেলা শিক্ষা অফিসার ওই চাহিদাসমূহ একীভূত করে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে একটি সংকলিত/সমন্বিত চাহিদাপত্র (Hard Copy & Soft Copy) এনটিআরসিএ-তে প্রেরণ নিশ্চিত করবেন।
এনটিআরসিএ প্রতি বছর প্রার্থী বাছাই সংক্রান্ত সকল পরীক্ষা গ্রহণ করে চাহিদা অনুযায়ী পদ/বিষয়ভিত্তিক জাতীয়-বিভাগ-জেলা-উপজেলা-থানাওয়ারী মেধাক্রম প্রণয়ন করে ফলাফল ঘোষণা করবে। পরিপত্রে বলা হয়েছে, ২১ অক্টেবর ২০১৫ জারিকৃত এসআরও-এর মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০০৫ এর ধারা ২১ এর ক্ষমতা বলে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরিক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধীমালা ২০০৬ এর সংশোধন করা হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে এসটিআরসিএ’র বিদ্যমান আইন ও বিধির সাথে সংগতি রেখে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ১ জানুয়ারী ১৯৮২ তারিখের বিজ্ঞপ্তিসহ ইতিপূর্বে শিক্ষা মনন্ত্রণালয়-মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর- সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকল পরিপত্র/বিজ্ঞপ্তি/নীতিমালা/নির্দেশনা/স্বারকে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরনের জন্য সংশ্লিষ্ঠ সকলকে অনুরোধ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নতুন জারিকৃত পরিপত্রে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের লক্ষে অনুসরণীয় এ পদ্ধতি কেবল প্রথম প্রবেশ (শিক্ষক হিসেবে নতুন নিয়োগ) পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধান বা সহকারী প্রধানসহ যেসব শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে সে সব পদে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে না।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ম্যানেজিং কমিটি-গভনিং বডির অনুমোধন ক্রমে প্রথম প্রবেশ পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগের লক্ষে সংশ্লিষ্ট নিয়োগের ২ মাস পূর্বে প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামোতে সরকার নির্ধারিত কোটার প্রাপ্যতা উল্লেখপূর্বক এনটিআরসিএ-তে অধিযানপত্র পেরণ করবেন।এনটিআরসিএ ওই অধিযাচন ভিত্তিতে এনটিআরসিএ ওয়েবসাইটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করবে এবং নিবন্ধিত প্রার্থীবৃন্দ অনলাইনে আবেদন করবেন।
এনটিআরসিএ অনলাইনে আবেদন প্রাপ্তির পর চাহিদা ও মেধাক্রম অনুয়ায়ী প্রার্থীদের অবহিত রেখে নিয়োগযোগ্য প্রতিটি পদের বিপরীতে ১ জন করে প্রার্থীর নাম অধিযানকারী প্রতিষ্ঠানে প্রেরন করবে এবং সে অনুসারে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে ক্ষেত্রমত ম্যানেজিং কমিটি বা গভনিং বডি নির্বাচিত প্রার্থী বরাবর ১ মাসের মধ্যে নিয়োগপত্র জারি করবে।
এনটিআরসিএ কর্তৃক কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য প্রার্থী নির্বাচনের সময় সংশ্লিষ্ট উপজেলার মেধা তালিকা অগ্রাধিকার পাবে। উপজেলায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে জেলা মেধাতালিকায়ও যাদি না পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে বিভাগীয় মেধাতালিকাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অগ্রাধিকারযোগ্য উপজেলা হতে বিভাগীয় মেধাতালিকা পর্যন্ত প্রার্থী না থাকলে জাতীয় মেধাতালিকা বিবেচনা করা হবে।
তবে, বিভাগীয় সদর এলাকায় অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে শুধু সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের প্রার্থী অগ্রাধিকার পাবেন। অগ্রাধিকারযোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে পরবর্তী কোনো অগ্রধিকার বিবেচ্য হবে না- জাতীয় মেধাতালিকা অনুসারে নিয়োগের জন্য প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।
রাজধানী শহর হিসেবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রাধিকার বিবেচনা করা হবে না-জাতীয় মেধাতালিকা অনুসারে নিয়োগের জন্য প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। কর্মরত কোনো শিক্ষক যদি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেতে আবেদন করেন তবে তাকেও অপরাপর আবেদনকারীদের একইরুপ মেধাক্রমের ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হব।
এর আগে নিবন্ধিত মেধাতালিকা বহির্ভূত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নিবন্ধন সনদে উল্লেখিত ঐচ্ছিক বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য মেধাক্রম নির্ধারিত হবে।
Leave a Reply