মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে দিনু। নিজের চলার কিছু বাধা থাকলেও স্বাধীন ভাবে চলতেই সে পছন্দ করে। কিন্তু এই চলাফেরার মধ্যে যে কি জ্বালা তাও বুঝে তারপরও চলে। বাবা শমরেশ খান এলাকার সম্মানী মানুষ। বাবার সম্মান ক্ষুন্ন হবে এমন কাজ দিনুর দ্বারা হবে না। দিনুর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ তার মা। খোদা ভক্তির চেয়েও সে মাকেই ভক্তি করে বেশি। দিনুর সাইকেল চালানোর আগ্রহ প্রবল কিন্তু ভাল চালাতে পারে না। এই সাইকেল চালানো নিয়ে দিনুর জীবনে একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা রয়েছে। অপ্রত্যাশিত এই কারনে সে কখনো ভাবেনি এমন ঘটনার সম্মুখীন তাকে হতে হবে। সমু হচ্ছে দিনুর খুব কাছের বন্ধু সম্পর্কে তারা চাচা -ভাতিজা।
একদিন সমু দিনুকে বলছে এই সাইকেল চালাতে যাবি আর দিনুত সাইকেলের জন্য পাগল সে রাজি হয়ে গেল আর বলল সমু আমার কাছে কিন্তু টাকা নেই। রফিক চাচার দোকান থেকে সাইকেল ভাড়া করে চালাতে হত তাই টাকার একটা ব্যাপার ছিল। সমু বলল আমার কাছে আছে সমস্যা হবে না। যেই কথা সেই কাজ। দিনু মাকে না বলেই সাইকেল চালাতে চলে গেল। তারা দুজন চলে গেল রফিক চাচার দোকানে এবং তৎক্ষনাৎ দুইটা সাইকেল নিল। সমু তখন দিনুকে বলল বন্ধু চল নানুর বাড়ি যাই। সাইকেল দিয়ে দূরে কোথাও যাওয়া হয়নি দিনুর তাই একটু সংকোচ বোধ করছিল তারপর আবার মাকেও বলে আসল না কিন্তু সাইকেল চালানোর লোভ সামলাতে পারল না। তারা যাত্রা শুরু করল দিনের শেষের দিকে সূর্য ডুবি ডুবি অবস্থায়।
কিন্তু এই যাত্রাতেই ঘটল অঘটন। দিনু আর সমু কে কার আগে যেতে পারে এমন প্রতিযোগিতার খেলা শুরু করে। হাইওয়ে রাস্তা এমনতেই গাড়ির একটা চাপ আছে। তার উপরে হাইস্পিডে সাইকেল চালানো খুবই ঝুকিপূর্ন। সেই ঝুঁকিটাই নিল দিনু আর সমু।দিনু এতটা ভাল সাইকেল চালাতে পারত না তারপরও এই খেলায় মেতে উঠেছে মন। সাইকেল চালানোর এক পর্যায়ে সমু অনেক আগে চলে গেল আর পেছনে পড়ে রইল দিনু। হঠাৎ দিনুর সামনে একটা মাইকো বাস এবার মাইকো বাসের সাথে পাল্লা ধরে সাইকেল চালানো শুরু করল। দিনুর সাইকেলের ব্রেকটা ছিল নষ্ট যার ফলে এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছে দিনুকে। মাইকোবাসটা তিন রাস্তার মোড়ে হঠাৎ ব্রেক চাপল কিন্তু দিনুর সাইকেল চলছিল হেলিকপ্টারের মত, দিনু তখন নিজের চোখে অন্ধকার দেখছিল। কারণ রাস্তার দুপাশে জঙ্গল এবং খাল সামনের দিকে মাইকোবাস আর বাম দিকের রাস্তাটা ছিল সেই রাস্তা দিয়ে এক বুড়ি যাচ্ছিল। ঐ সময় এতকিছুর ভাবার সময় নেই শুধু একটাই চিন্তা নিজেকে কিভাবে রক্ষা করা যায়। দিনু তার সাইকেল বাম দিকে চালিয়ে নিল কিন্তু যেই নিল সাইকেলটা যেন ইচ্ছে করেই আধমরা এই বুড়ির উপর গিয়ে পড়ল। দিনুকে আটকাল, এক লোক এসে দু একটা চড় থাপ্পড়ও দিয়েছে ঐ দিকে সমু দিনুর বাড়িতে খবর পাঠাতে চলে গেল। আসামি হিসেবে দিনু রয়ে গেল বুড়ির বাড়িতে ।
সমাপ্ত।
Leave a Reply