১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানান। দেশজুড়ে সে সময় চলছিল অসহযোগ আন্দোলন। সবার মুখে কেবল একটিই স্লোগান ‘পদ্মা যমুনা মেঘনা, তোমার আমার ঠিকানা’ এবং ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো। বঙ্গবন্ধুর ডাকে যখন সারাদেশের জনগণ স্বাধীনতার স্বপ্নপূরণের জন্য যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক সে সময় ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কাপুরুষের মতন রাতের অন্ধকারে বর্বরের মতন ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি জনগণের উপর। “অপারেশন সার্চ লাইট” নামে চলে গণহত্যা। তাই অন্য যে কোন দিনের চেয়ে এই দিনটি আমাদের কাছে একটু আলাদা।
ঐ দিন শুধু আমাদের হত্যা-ই শুধু করতে চায় নি আমাদের বাঙালিত্ত্বও নষ্ট করার ব্রত নিয়ে তারা অপারেশনে নেমেছিল। বালুচ কসাই হিসেবে খ্যাত ল্যাফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে পশ্চিম পাকিস্তানে থেকে এখানে নিয়ে আসা হয় এবং অপারেশন সার্চলাইট বাস্তবায়নের জন্য তাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গর্ভণর নিযুক্ত করা হয়।
পৃথিবীর জখন্যতম এই গণহত্যার যেন কোন সাক্ষী না থাকে সেজন্য বিদেশী সাংবাদিকদের ২৬ মার্চ সকালে ঢাকা থেকে বের করে দেয়া হয়। ২৫শে মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানার তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্প, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, রোকেয়া হল ও জহরুল হক হলসহ সারা ঢাকা শহরে তারা হত্যাযজ্ঞ চালায়। এক রাতের মধ্যেই ঢাকা শহরকে মৃত্যুকুপ বানিয়ে ফেলে।
দৈনিক ইত্তেফাকে গণহত্যা বন্ধ কর নামে হেড লাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়ে এবং ২৭ মার্চে সমগ্র
বাঙলাদেশে হরতালের ডাক দেওয়া হয়। অথচ তৎকালীন পাকিস্তানপন্থী ও জামাতী পত্রিকা “দৈনিক সংগ্রামপত্রিকা” টি র্নিলজ্জভেবে একের পর এক মিথ্যাচার করেছিল। এমন কী বর্বর হত্যাযজ্ঞকেও তারা সাধুবাদ জানাতে ছাড়ে নি।
১৯৭১ সালের সেই কালরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে পাকিস্তানি বাহিনী ভয়াল
হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।পাকিস্তানি সেনাদের নারকীয় তাণ্ডবের শিকার হন ওই হলের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মচারী-কর্মকর্তারা। “দি ক্রুয়েল বার্থ অব বাংলাদেশ” থেকে জানা যায় সে রাতে রোকেয়া হলে আগুন ধরানো হয়েছিল এবং ছাত্রীরা হল থেকে দৌড়ে বের হবার সময় মেশিন গান দিয়ে গুলি করা হয়। ২৬ মার্চ সকালের দিকে সেনাবাহিনীর কন্ট্রোল রুম ও ৮৮ ইউনিটের মধ্যে যে কথোপকোথন হয় তা থেকে জানা যায় ক্যাম্পাসে প্রায় ৩০০ ছাত্র নিহত হয়। এছাড়াও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড.নূরুল্লার ধারণকৃত ভিডিওটি ওয়েব সাইটে আজও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশবিকতার সাক্ষী হয়ে আছে। ভিডিও চিত্রে দেখা যায় ছাত্রদের দিয়েই জগন্নাথ হলের সামনে গর্ত খোড়া হচ্ছে আবার সেই গর্তেই ছাত্রদের লাশ মাটিচাপা দেয়া হচ্ছে।
রোকেয়া হল সর্ম্পকে সুইপার ইন্সপেক্টর সাহেব আলী সাক্ষাৎকারে বলেন- ২৮ মার্চ সকালে রেডিওতে সকল কর্মচারীকে কাজে যোগদানের চরম নির্দেশ দিলে আমি পৌরসভায় যাই। পৌরসভার কনজারভেন্সি অফিসার ইদ্রিয় মিঞা আমাকে ডোম দিয়ে অবিলম্বে ঢাকা শহরের বিভিন্ন
জায়গায় পড়ে থাকা লাশ সরিয়ে ফেলতে বলেন।…
৩০ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ছাদ থেকে ১৮ বছরের এক ছাত্রীর লাশ তুলেছি। তার
গায়ে কোন গুলির চিহ্ন ছিল না। দেখলাম তার মাথঅর চুল ছিড়ে ফেলা হয়েছে, লজ্জাস্থান থেকে পেট ফুলে অনেক উপরে উঠে আছে, যোনি পথও রক্তাক্ত। আমি একটি চাদর দিয়ে লাশটি ঢেকে নিচে নামিয়ে আনলাম।”
ভালো লাগলে আপনার মতামত জানানোর অনুরোধ রইলো। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানান। দেশজুড়ে সে সময় চলছিল অসহযোগ আন্দোলন। সবার মুখে কেবল একটিই স্লোগান ‘পদ্মা যমুনা মেঘনা, তোমার আমার ঠিকানা’ এবং ‘বীরবাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো। বঙ্গবন্ধুর ডাকে যখন সারাদেশের জনগণ স্বাধীনতার স্বপ্নপূরণের জন্য যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক সে সময় ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কাপুরুষের মতন রাতের অন্ধকারে বর্বরের মতন ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি জনগণের উপর। “অপারেশন সার্চ লাইট” নামে চলে গণহত্যা। তাই অন্য যে কোন দিনের চেয়ে এই দিনটি আমাদের কাছে একটু আলাদা। ঐ দিন শুধু আমাদের হত্যা-ই শুধু করতে চায় নি আমাদের বাঙালিত্ত্বও নষ্ট করার ব্রত নিয়ে তারা অপারেশনে নেমেছিল। বালুচ কসাই হিসেবে খ্যাত ল্যাফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে পশ্চিম পাকিস্তানে থেকে এখানে নিয়ে আসা হয় এবং অপারেশন সার্চলাইট বাস্তবায়নের জন্য তাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গর্ভণর নিযুক্ত করা হয়।
পৃথিবীর জখন্যতম এই গণহত্যার যেন কোন সাক্ষী না থাকে সেজন্য বিদেশী সাংবাদিকদের ২৬ মার্চ সকালে ঢাকা থেকে বের করে দেয়া হয়। ২৫ মার্চ ১৯৭১ রাতে সুইপার রাবেয়া খাতুন রাজারবাগ পুলিশ লাইনের এস এফ ক্যান্টিনে ছিলেন।পুলিশদের প্রতিরোধ ব্যর্থ হবার পরে ধর্ষিত হন রাবেয়া খাতুন। সুইপার বলে প্রাণে বেঁচে যান কারণ রক্ত ও লাশ পরিস্কার করার জন্য তাকে দরকার ছিল সেনাবাহিনীর।
“২৬ মার্চ ১৯৭১,বিভিন্ন স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেয়েদের ধরে আনা হয়।আসা মাত্রই সৈনিকরা উল্লাসে ফেটে পড়ে। তারা ব্যারাকে ঢুকে প্রতিটি যুবতী, মহিলা এবং বালিকার পরনের কাপড় খুলে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে ধর্ষণে লিপ্ত হতে থাকে। রাবেয়া খাতুন ড্রেন পরিস্কার করতে করতে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। পাকসেনারা ধর্ষন করেই থেকে থাকেনি,সেই মেয়েদের বুকের স্তন ও গালের মাংস কামড়াতে কামড়াতে রক্তাক্ত করেদেয়,মাংস তুলে নেয়।মেয়েদের গাল,পেট,ঘাড়,বুক,পিঠ ও কোমরের অংশ তাদের কামড়ে রক্তাক্ত হয়ে
যায়।এভাবে চলতে থাকে প্রতিদিন। যেসব মেয়েরা প্রাথমিকভাবে প্রতিবাদ করত তাদের স্তন ছিড়ে
ফেলা হত,যোনি ও গুহ্যদ্বা্রের মধ্যে বন্দুকের নল,বেয়নেট ও ধারালো ছুরি ঢূকিয়ে হত্যা করা হত। বহু অল্প বয়স্ক বালিকা উপুর্যুপুরি ধর্ষণে নিহত হয়। এর পরে লাশগুলো ছুরি দিয়ে কেটে বস্তায় ভরে বাইরে ফেলে দেয়া হত।
হেড কোয়ার্টারের দুই,তিন এবং চারতলায় এই্ মেয়েদের রাখা হত, মোটা রডের সাথে চুল বেঁধে। এইসব ঝুলন্ত মেয়েদের কোমরে ব্যাটনদিয়ে আঘাত করা হত প্রায় নিয়মিত,কারো কারো স্তন কেটে
নেয়া হত,হাসতে হাসতে যোনি পথে ঢুকিয়ে দেওয়া হত লাঠি এবং রাইফেলের নল। কোন কোন সৈনিক উঁচু চেয়ারে দাঁড়িয়ে উলঙ্গ মেয়েদের বুকে দাঁত লাগিয়ে মাংস ছিড়ে নিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ত,কোন মেয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তখনই হত্যা করা হত। কোন কোন মেয়ের সামনের দাঁত ছিল না, ঠোঁটের দু’দিকের মাংস কামড়ে ছিড়ে নেয়া হয়েছিল,প্রতিটি মেয়ের হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে থেতলে গিয়েছিল লাঠি আর রডের পিটুনিতে। কোন অবস্থাতেই তাঁদের হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে দেয়া হত না, অনেকেই মারা গেছে ঝুলন্ত অবস্থায়।”
Leave a Reply