
বাড়িতে যত বেশি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়, ততই বিদ্যুৎ বিল বেড়ে যায়। তবে কিছু সহজ ও কার্যকরী উপায় অনুসরণ করে আপনি সহজেই বিদ্যুৎ বিল কমানো সম্ভব।
বিদ্যুৎ সাশ্রয় শুধু আপনার ব্যক্তিগত সঞ্চয়ই নয়, এটি একটি সামাজিক দায়িত্বও বটে। তাই আজ থেকেই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু করুন।
বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১২ টি কার্যকরী উপায়
১. এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহার করুন
সাধারণ ইনক্যান্ডেসেন্ট বাল্বের পরিবর্তে LED বা CFL বাল্ব ব্যবহার করুন। এগুলো কম বিদ্যুৎ খরচ করে এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। LED বাল্ব সাধারণ বাল্বের তুলনায় ৭৫% পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে।
২. অপ্রয়োজনে লাইট ও ফ্যান বন্ধ করুন
অনেক সময় আমরা ঘর থেকে বের হওয়ার সময় লাইট বা ফ্যান বন্ধ করতে ভুলে যাই। এই ছোট ছোট ভুলে বিদ্যুতের অপচয় হয়। তাই ঘর থেকে বের হওয়ার আগে সব লাইট, ফ্যান এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বন্ধ করে যাওয়ার অভ্যাস করুন।
৩. এনার্জি স্টার রেটিং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন
নতুন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি কেনার সময় এনার্জি স্টার রেটিংযুক্ত পণ্য বেছে নিন। এই রেটিংযুক্ত যন্ত্রপাতি কম বিদ্যুৎ খরচ করে এবং পরিবেশবান্ধব।
৪. এয়ার কন্ডিশনার সঠিক তাপমাত্রায় ব্যবহার করুন
এয়ার কন্ডিশনার সব সময় ২৪-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখুন। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করলে বিদ্যুতের খরচ বেড়ে যায়। এছাড়াও, নিয়মিত এয়ার কন্ডিশনারের ফিল্টার পরিষ্কার করুন।
৫. সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ান
সৌর প্যানেল ইনস্টল করে বাড়ির বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা পূরণ করতে পারেন। সৌরশক্তি পরিবেশবান্ধব এবং দীর্ঘমেয়াদে বিদ্যুৎ বিল কমানোর একটি কার্যকরী উপায়।
৬. পানির হিটার সঠিক ব্যবহার
পানির হিটার সব সময় চালু রাখার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন শেষে হিটার বন্ধ করে দিন। এছাড়াও, হিটারের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বাড়ানো থেকে বিরত থাকুন।
৭. স্ট্যান্ডবাই মোড এড়িয়ে চলুন
টিভি, কম্পিউটার, চার্জার ইত্যাদি যন্ত্রপাতি ব্যবহার শেষে স্ট্যান্ডবাই মোডে রাখলে বিদ্যুৎ খরচ হয়। তাই এগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিন।
৮. ফ্রিজের ব্যবহারে সচেতন হোন
ফ্রিজের দরজা বারবার খোলা এবং দীর্ঘ সময় খোলা রাখলে বিদ্যুতের খরচ বাড়ে। ফ্রিজে গরম খাবার রাখবেন না এবং নিয়মিত ফ্রিজের কয়েল পরিষ্কার করুন।
৯. বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী রান্নার পদ্ধতি
রান্নার সময় প্রেশার কুকার ব্যবহার করুন। এটি কম সময়ে রান্না করে এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। এছাড়াও, গ্যাসের চুলা বা কাঠের চুলা ব্যবহার করলে বিদ্যুতের খরচ কমবে।
১০. বিদ্যুৎ বিল মনিটরিং
মাসিক বিদ্যুৎ বিল মনিটরিং করুন এবং কোন মাসে বিল বেশি হয়েছে তা খতিয়ে দেখুন। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন কোন যন্ত্রপাতি বেশি বিদ্যুৎ খরচ করছে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবেন। অথবা মিটারে কোন গণ্ডগোল আছে কিনা আপনি বুঝতে পারবেন।
১১. প্রাকৃতিক আলো ও বাতাসের ব্যবহার
দিনের বেলা ঘরে প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করুন। এতে করে লাইট ও ফ্যান কম ব্যবহার করতে হবে।
১২. বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী অভ্যাস গড়ে তুলুন
পরিবারের সবাইকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী অভ্যাস গড়ে তুলতে উৎসাহিত করুন। ছোট ছোট সচেতনতা বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
বিদ্যুৎ বিল কমানো কোনো কঠিন কাজ নয়। শুধু প্রয়োজন সচেতনতা এবং কিছু ছোট ছোট পরিবর্তন। উপরের উপায়গুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই বিদ্যুৎ বিল কমানো সম্ভব। এতে করে আপনার অর্থ সাশ্রয় হবে এবং পরিবেশও রক্ষা পাবে।
Leave a Reply