সম্প্রতি ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিনিধি অফিস উদ্বোধন করেছে ডিবিএস। এর ফলে, বিশ্বের ১৯টি দেশে নিজেদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করল ব্যাংকটি। রাজধানীর একটি হোটেলে এ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া (জ্যেষ্ঠ সচিব) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিবিএস এর প্রধান নির্বাহী পিয়ুশ গুপ্তা, ডিবিএস গ্রুপের হেড অব ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিং তান সু শান এবং ডিবিএস ঢাকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ তাহসিনা বানু। এছাড়াও, অনুষ্ঠানে ডিবিএস এর ১শ’ শীর্ষ গ্রাহক, ব্যবসায়িক অংশীদার ও কর্মী এবং সরকারি প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
বৈশ্বিক মহামারির আগে এক দশকের বেশি সময় ধরে (২০০৮-২০১৯) বাংলাদেশের অর্থনীতির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৭ শতাংশ। ২০০০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত, দেশের অর্থনীতির আকার বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৭ গুণ। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তরুণরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, দেশের শ্রমশক্তিতে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি, মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যাও বাড়ছে, যা আগামী এক দশকের মধ্যে দেশের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (জ্যেষ্ঠ সচিব) লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, “আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা বাংলাদেশকে ২০৩৫ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বহির্বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিদেশি বিনিয়োগ ও রেমিটেন্স প্রবাহ ত্বরাণ্বিত করতে চাই। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ ব্যাংক ডিবিএস বাংলাদেশে এর কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে।
উদ্ভাবন, টেকসই উন্নয়ন এবং উদ্যোগ ও উদ্যোক্তাদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক ব্যবসা কেন্দ্র এবং
বিশ্বব্যাপী ইনকিউবেটরে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আমার বিশ্বাস, এ যাত্রায়
ডিবিএস’র অংশীদারিত্ব থেকে আমরা উপকৃত হব।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল বলেন, “ঢাকায় ডিবিএস ব্যাংকের প্রতিনিধি অফিস খোলা বাংলাদেশের জন্য এক মাইলফলক যেহেতু আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং সম্পর্ক সম্প্রসারণ করছি। আমার প্রত্যাশা এ অংশীদারিত্ব নতুন আর্থিক পণ্য ও বিনয়োগের সুযোগ বিকাশের ক্ষেত্রে উভয়ের জন্য লাভজনক হবে।”
ডিবিএস’র প্রধান নির্বাহী পিয়ুশ গুপ্তা বলেন, “চীন ও ভারতের নিকটবর্তী হওয়ায় দক্ষিণ এশীয় পরাশক্তিদের কাছ থেকে টেকসই বাণিজ্য ও ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ লাভের ক্ষেত্রে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। যেসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পখাত, বিশেষ করে টেলিযোগাযোগ, গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম ও জ্বালানি সহ টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল খাতে ব্যবসা পরিচালনা ও সম্প্রসারণে আগ্রহী, তাদের এখানে বিনিয়োগের চমৎকার সুযোগ রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে বাণিজ্য অর্থায়ন ও অ্যাডভাইজরি সেবা দিচ্ছে ডিবিএস। ডিবিএস ঢাকার প্রতিষ্ঠা ব্যাংকের কার্যক্রমে গতি প্রদান করবে এবং ডিবিএস’র বৈশ্বিক গ্রাহকদের সাথে বাংলাদেশের বাজারের সংযোগ স্থাপনের প্রক্রিয়াকে কার্যকরী করবে।”
উল্লেখ্য, ডিবিএস ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত একটানা গ্লোবাল ফাইন্যান্সের ‘সেইফেস্ট ব্যাংক ইন এশিয়া’ স্বীকৃতি লাভ করেছে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্থিক প্রকাশনা গ্লোবাল ফাইন্যান্স ডিবিএস -কে গত আগস্টে ‘ওয়ার্ল্ড’স বেস্ট ব্যাংক’ স্বীকৃতি দেয়, ২০১৮ সাল থেকে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো স্বনামধন্য এ ম্যাগাজিনটির শীর্ষ স্বীকৃতি অর্জন করেছে ডিবিএস। এছাড়াও, ব্যাংকটি গত পাঁচ বছরে সাতবারের মতো বৈশ্বিকভাবে সেরা ব্যাংকের স্বীকৃতি অর্জন করেছে, যা ব্যাংকিংখাতের ভবিষ্যতকে নতুন আকৃতিদানে অগ্রণী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে ব্যাংকের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে।
Leave a Reply