নীলফামারীর ডিমলায় একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হওয়া মা-মেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায়ও বসেছেন। মেয়ের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন চার সন্তানের জননী মারুফা। রোববার (০৬ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী মারুফা আক্তার এবং তার মেয়ে শাহী সিদ্দিকা।
পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ব্যক্তি হলেন- নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী গ্রামের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মারুফা। তিনি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ের বিএম শাখার শিক্ষার্থী। তার মেয়ে শাহী সিদ্দিকা একই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন।
জানা গেছে, মারুফা ২০০৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। একই বছর তার অমতেই বিয়ে হয়। সংসার জীবনের ব্যস্তার কারণে সুযোগ হয়নি পড়াশোনার। তবে স্বামীর সহযোগিতায় মেয়ে শাহী সিদ্দিকীর সঙ্গেই ভর্তি হন নবম শ্রেণিতে। পরে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় একসঙ্গে অংশ নিয়ে মেয়ের চেয়ে ভালো ফলাফল করেন মারুফা আকতার। তিনি এসএসসিতে জিপিএ-৪.৬০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন এবং তার মেয়ে শাহী সিদ্দিকা পেয়েছিলেন জিপিএ-৩। তবে এবার মেয়ের সঙ্গে দিচ্ছেন এইচএসসি পরীক্ষা।
এদিকে ডিমলা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন মারুফার মেয়ে। অন্যদিকে একই প্রতিষ্ঠান থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ডিমলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে দিচ্ছেন মা মারুফা ।মারুফা বেগম বলেন, দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবা মা বিয়ে দিয়েছিলেন। তখন ইচ্ছা থাকলেও পড়তে পারিনি। পড়াশোনার ইচ্ছা কখনও দমে যায়নি। পরে স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করলে সম্মতি দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, মেয়ের সঙ্গে পড়াশোনার বিষয়টি নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি করে। অনেকে আবার অভিনন্দন জানান। এইচএসসিতে ভালো ফল পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির চেষ্টা করব। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকেই মারুফা ও শাহী সিদ্দিকী পরীক্ষা অংশ নিচ্ছে। তাদের একজন কারিগরি থেকে ও আরেকজন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে। আমরা সবাই তাদের উৎসাহ দেই।
Leave a Reply