ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর কার্যনির্বাহী পরিষদ ২০২২-২৪ এর নির্বাচনে অগ্রগামী প্যানেলের ৮ জন বিজয়ী হয়েছেন। দ্য চেন্জমেকার্স প্যানেল থেকে বিজয়ী হয়েছেন একজন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে শনিবার (১৮ জুন) অনুষ্ঠিত ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচন শেষে এই চিত্র দেখা গেলো। কার্যনির্বাহী পরিষদের ৯টি পদের আটটিতেই বিজয়ী হয়েছে অগ্রগামী প্যানেল। অপরদিকে চেঞ্জমেকারস পেয়েছে একটি পদ। আর ঐক্য প্যানেলের কেউ বিজয়ী হতে পারেননি।
ধানমন্ডির সাইয়্যেদানা কমিউনিটি সেন্টারে সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে। নির্বাচনে মোট ৭৯৫ ভোটারের মধ্যে ৬১১ জন ভোট দিয়েছেন। গণনা শেষে রাত পৌনে ৮টায় ফল ঘোষণা করা হয়।
এবারের নির্বাচনে ‘অগ্রগামী’, ‘দ্য চেঞ্জ মেকার্স’ এবং ‘ঐক্য’ নামে তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তিন প্যানেলের ২৭ জনসহমোট ৩১ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ।
নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন ফুডপান্ডার সৈয়দা আম্বারীন রেজা। তার মোট ভোট সংখ্যা ৪৫৩টি। কমজগৎ টেকনোলজিসের মোহাম্মাদ আবদুল ওয়াহেদ তমাল পেয়েছেন ৩৮৬ ভোট। ধানসিঁড়ি ডিজিটালের শমী কায়সার পেয়েছেন ৩৬৫, ব্রেকবাইটের আসিফ আহনাফ ৩৩২, পেপার ফ্লাইয়ের শাহরিয়ার হাসান ৩০৮, রেভারি করপোরেশনের নাসিমা আক্তার ৩০৭, ডায়াবেটিস স্টোরের মোহাম্মাদ সাহাব উদ্দিন ২৮৭, ডিজিটাল হাব সলিউশনসের মো. সাইদুর রহমান ২৭৩, সেবা ডটএক্সওয়াইজেডের মো. ইলমুল হক সজীব ২৭০ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আমিন হেলালী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাকি দুই সদস্য এ এইচ এম বজলুর রহমান ও মো. আবদুর রাজ্জাক। নির্বাচিত এই নয় পরিচালকের মধ্যে আগামী তিন দিনের মধ্যে কার্যনির্বাহী কমিটির পদ বণ্টন করা হবে।
জয়ী হওয়ার পর অনুষ্ঠিত তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে অগ্রগামী প্যানেল প্রধান শমী কায়সার বলেছেন, আমি আমার ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞ। কেননা, নির্বাচনকে কেন্দ্রকরে গত এক মাস ধরে রিজলভড ইস্যুগুলো নিয়েও আমাদের বিব্রত করার অপচেষ্টা চলেছে। ফেলো ফিলিং নিয়ে কাজ করলেও এই ধরনের ইন্ডাস্ট্রিতে কোভিডে যারা আমাদের ওপর আস্থা রেখে সামনে চলেছিলো তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে এভাবে হঠাৎ করে বিব্রতকর ও অগ্রহনযোগ্য মেসেজ পাঠিয়েছে তাতে আমার কাছে খারাপ লাগছিলো। ব্যক্তিগত ভাবে আমি মর্মমাহত হয়েছিলাম। মেম্বাররা সেসব মিথ্যায় কান না দিয়ে আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে। আমরা সরবে-নিরবে কাজ করার কারণেই অপপ্রচার কাজে লাগেনি। মিথ্যা অপবাদে আমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি।
বিশ্বাসের জয় হয়েছে। তাই গত বছর যদি আমরা আমাদের দায়িত্বের ৪০ শতাংশ কাজ করি, তাহলে এবার হান্ড্রেড পার্সেন্ট দিয়ে সবগুলো কমিটমেন্ট পূরণ করতে কাজ করবো। বিষোদগার করে নয় একসাথে সবাইকে নিয়ে কাজ করবো। প্রত্যেক ভোটারের কাছে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। কেননা আজ প্রমাণ হয়েছে, সত্য চিরদিন সত্য। সত্য প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না। অর্থের কাছে হেরে যায় না।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্যানেল থেকে নির্বাচিত না হওয়া রুহুল কুদ্দুস ছোটন যেমন ছিলেন; তেমনি প্যানেলের বাইরে থেকে নির্বাচিত পরিচালক সেবা এক্সওয়াইজেডের ইলমুল হককের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে তবে জ্যামের কারণে তিনি এসে পৌঁছতে পারেননি বলে জানান শমী কায়সার।
অপরদিকে আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, কোভিডের দুই বছরে লকডাউনে আমরা শুধু সদস্যদের কল্যাণেই কাজ করিনি; আমরা আমাদের পলিসিগত যত ঘাটতি ছিলো তা ওভারকাম করতে চেষ্টা করেছিলাম। ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ও এসওপি দিয়ে স্ক্যামারদের পথ বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। পাশাপাশি ডিজিটাল ইকোনোমি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ক্ষেত্রে আমরা অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আজকের রায়ের মাধ্যমে তারই জয় হয়েছে। তাই আগামীতেও এই ধারা অব্যহত থাকবে। আগামী ২ বছরে ১০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এই প্লাটর্মকে প্রস্তুত করবো। ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের জন্য ড্রাইভ দেবো।
প্রথবারের ভোটেই সর্বোচ্চ ভোটে জয়ী আম্বারীন রেজা বলেন, অগ্রগামীর কারণে আমি আজ নির্বাচনে আসতে পেরেছি। এজন্য তমাল ভাই ও শমী আপার কাছে কৃতজ্ঞ। তবে ভোটাররা যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তাতে আপার রেসপনসিবিলিটি অনেকগুণ বেড়ে গেলো। যেভাবে ইলেকশনের জন্য কাজ করেছি, সেভাইবেই আগামীতে ইসি, মেম্বার এবং ইন্ডাস্ট্রি, সর্বোপরি পলিসি ঘাটতি নিয়ে কাজ করবো।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের নানা প্রশ্নের জবাব দেয়ার পাশাপাশি ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আসিফ আহনাফ, নাসিমা আক্তার নিশা, মোহাম্মাদ সিহাব উদ্দিন শিপন, সাইদুর রহমান এবং শাহরিয়ার হাসান।
Leave a Reply