সরকারি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিতে সম্মত উপাচার্যরা

UGCB

উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সরকারি কলেজগুলো (ডিগ্রি ও সম্মান) সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিতে সম্মত হয়েছে ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।
UGCB
রোববার (০৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ভবনে আয়োজিত এক জরুরি সভায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং তাদের প্রতিনিধিগণ এ ব্যাপারে সম্মত হন। বিষয়টি নিয়ে অনাপত্তির কথা জানান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং তাদের প্রতিনিধিবৃন্দ।

বিষয়টি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, সভাপতি এবং ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী।

ইউজিসির সদস্য মহব্বত খানকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে রয়েছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন উপাচার্যগণ। সেই সঙ্গে আছেন, ইউজিসির একজন অতিরিক্ত পরিচালক এবং দুইজন সদস্য। সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন ইউজিসির অতিরিক্ত পরিচালক।

গত ৩১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে সরকারি কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি পাঠান। এরই ধারাবাহিকতায় রোববারের এ জরুরি সভা।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, দেশের অধিকাংশ সরকারি কলেজে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও অবকাঠামো না থাকা পরেও অনার্স শাখা খুলে বসে আছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের ক্লাশ নেওয়া হয়না, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়না। এর ফলে তারা শিক্ষার গুণগত মান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের এ অবস্থা থেকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই বলেও মত দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে সর্বসম্মতি দেওয়ার জন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে এ কে আজাদ চোধুরী বলেন, আপনারা বলেছেন- এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আপনাদের পর্যাপ্ত জনবল দরকার। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাবো।

ইউজিসি আরো চেয়ারম্যান বলেন, যে কোনো কিছু বাস্তবায়নেই প্রয়োজন অর্থের। আমাদের শিক্ষাখাতে বরাদ্দ থাকে জিডিপির মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ। তার মধ্য থেকে উচ্চশিক্ষা খাতে আমরা পাই দশমিক ৮ থেকে ১ দশমিক ৫ পর্যন্ত। যা খুবই অপর্যাপ্ত। এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ অন্তত ২ থেকে ৩ শতাংশ হওয়া উচিত।

উচ্চ শিক্ষাখাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তা দিয়ে ‘কোয়ালিটি এডুকেশন’ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাবো, এ খাতে যেন পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়।

দেশের সব সরকারি কলেজের উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মোট ২ হাজার ১৫৪টি কলেজের মোট ২১ লাখ ৭ হাজার ৬০২ শিক্ষার্থী রয়েছেন।

এরমধ্যে, ২৭৫টি সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত রয়েছেন ৮ লাখ ১৩ হাজার শিক্ষার্থী। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ সব কলেজ এখন সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে শিক্ষার গুণগত মানের অভাব এবং সেশনজটকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দ।

এ ব্যাপারে তাদের আশা, সরকারি কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আসলে এ সমস্যা দূর হয়ে গতিশীল হবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম।

তথ্যসূত্রঃ বাংলানিউজ





About লেখাপড়া বিডি ডেস্ক 1519 Articles
লেখাপড়া বিডি বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা বিষয়ক বাংলা কমিউনিটি ব্লগ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*