ছোট গল্পঃ জসিম ও সালেহা

জসীম ও সালেহা দুজনই গরীব ঘরের ছেলে মেয়ে। দুজনই এক ই গ্রামে থাকে। দুজনের বাবা মার ইচ্ছায় তাদের একদিন বিয়ে হল। বিয়ের সময় জসীমের বয়স ছিল ২১। সালেহার বয়স ছিল ১৬। বাসর ঘরে জসীম জানতে পারলো,তার স্ত্রী যে কিনা ইন্টার পাশ,তার ইচ্ছা যে সে ম্যানেজমেন্টে অনার্স মাস্টার্স কম্প্লিট করবে। তো স্বামী তার স্ত্রীর আশা পূরণে জন্য স্ত্রী কে নিয়ে শহরে এসে দিনরাত রিক্সা চালালো। সেই রিকশা চালিয়ে সে তাকে পড়ালেখা করাল। স্ত্রী সালেহাও একসময় ফার্স্টক্লাস পেয়ে অনার্স কম্প্লিট করল। অনার্স কমপ্লিট করার পরই তার ভাগ্য খুলে গেল। লটারি জিতে সে পাঁচ কোটি টাকা পেল।

ও ভালো কথা,সালেহার সহপাঠীরা কেউ জানত না যে সালেহার বিয়ে হয়েছে। তারা যখন জসিম কে দেখে বলত ইনি কে? জবাবে সালেহা বলত আমার ভাই। আর বিয়ের পর জসীম ও সালেহার মধ্যকার কোন শারীরিক সম্পর্কও ছিল না।
পাঁচ কোটি টাকা পাওয়ার পর সে জসীম কে ইগ্নোর করা শুরু করলো। একসময় সে জসীমের সাথে সমস্ত সম্পর্কচ্যুত করে জসীম কে ডিভোর্স দিল। সে ইতোমধ্যে পাঁচ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দুটি গার্মেন্টস, একটি হোটেলের মালিক। আর ব্যক্তিগত বাড়ি গাড়ি তো আছেই।

সালেহা এখন এই ঢাকা শহরের অন্যতম সেরা ধনী। অনেক ছেলেই এখন সালেহাকে বিয়ে করার জন্য একপায়ে দাড়িয়ে আছে।

জসীম এখনও আগের মত রিকশা চালিয়ে নিজের জীবিকা চালাতে লাগল।

আর সালেহা এক বড়লোক কে বিয়ে করলো। বিয়ের পরই সর্বনাশ শুরু সালেহার। বিয়ের ২ বছর পর তার ক্যান্সার ধরা পড়ল। লাস্ট স্টেজে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। তার স্বামী তাকে ত্যাগ করল। এত কিছু থাকার পরও সালেহা আজ নিঃস্ব। কষ্টে জর্জরিত। মৃত্যুর আগে তার ইচ্ছা ছিল সে জসীমের কাছে ক্ষমা চাবে। কিন্তু তা চাওয়ার আগেই সালেহার মৃত্যু হয়।

নীতিকথাঃ নিমক হারামের পরিনতি কখনও ভাল হয় না।





About Sifat Viper 18 Articles
ঢাকা কমার্স কলেজের ছাত্র। লেখালেখি আমার শখ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*