‘ধ্বংসের প্রান্তসীমা থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উঠে দাঁড়িয়েছে’ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্তিতে ‘রজতজয়ন্তী’ উদযাপন কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ এর সভাপতিত্বে ২৬-১০-২০১৭ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় গাজীপুর ক্যাম্পাসে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি প্রধান অতিথি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তা এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মাননীয় সচিব জনাব মোঃ সোহরাব হোসাইন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ নোমান উর রশীদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

‘রজতজয়ন্তী’ উপলক্ষে কেক কেটে এবং তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর ছিল আলোচনা সভা, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তার বক্তব্য পেশ, স্মৃতিচারণ এবং সর্বশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. দুর্গাদাস ভট্টাচার্য, অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ ও সাবেক কোষাধ্যক্ষ অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদসহ অন্যান্যরা।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধিভুক্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে নানা অনিয়মের আবর্তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ধ্বংসের প্রান্তসীমায় পৌঁছে গিয়েছিল। বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়কে সে অবস্থা থেকে অনেকটা তুলে আনতে সক্ষম হয়েছে। সেশনজট ছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর সমস্যা। তা নিরসনকল্পে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশেষ একাডেমিক প্রোগ্রাম গ্রহণ করায় ইতোমধ্যে সেশনজট প্রায় দুরীভূত হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে বিশ্বমানের জ্ঞান, যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জন করে জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে পারে সেটিই হওয়া উচিত আমাদের সকলের অগ্রাধিকার।’

রজতজয়ন্তী বক্তা ড. গওহর রিজভী তাঁর বক্তব্যে বলেন, “উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকারের পাশাপাশি উন্নতমানের শিক্ষা নিশ্চিত করা আবশ্যক। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা বহুলাংশে অর্থহীন হয়ে দাড়ায়। মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষক ও মানসম্পন্ন শিক্ষার্থী থাকা আবশ্যক। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশে উচ্চশিক্ষার বিস্তারে অসাধারন ভূমিকা পালন করছে। এখন প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত হবে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা। আর মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য প্রশিক্ষিত শিক্ষক ও ক্লাসরুম টিচিংয়ের বিকল্প নাই।”

অনুষ্ঠানের সভাপতি মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শুধু দেশের সর্ব বৃহত্তম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নয়, এটি দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় প্রতিষ্ঠান। সারাদেশ জুড়ে বিস্তৃত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২২৪৯ কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এদের অধিকাংশই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অস্বচ্ছল ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের সন্তান। এ প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে তারা ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে সাফল্য লাভের পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।”

সভাশেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুইদিনব্যাপী রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সমাপ্ত হয়।





About লেখাপড়া বিডি ডেস্ক 1519 Articles
লেখাপড়া বিডি বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা বিষয়ক বাংলা কমিউনিটি ব্লগ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*