পবিত্র রমজান কবরবাসীদের জন্য ঈদের মাস। কারণ এ মাসে কবরের আজাব বন্ধ থাকে। আর ঈদের নামাজের পরপরই তাদের কবরের আজাব আবার শুরু হয়ে যায়।
আমরা এই পবিত্র রমজানে আমাদের অতিপ্রিয় মানুষগুলোকে যেন ভুলে না যাই, যারা কবরবাসী হয়েছেন। ভুলে গেলে চলবে না একদিন আপনাকেও কবরে যেতে হবে। অনেকের বাবা নেই, মা নেই, ভাই নেই, বোন নেই। এই পবিত্র মাসে তাদের জন্য আমল করলে তারা অনেক খুশি হন।
কবরে শুয়ে থাকা মানুষগুলো তাদের স্বজনদের কাছ থেকে দোয়া ছাড়া অন্যকিছুই আশা করে না। তাই প্রতিটি মুসলমানকেই কবরবাসীদের জন্য দোয়া করা উচিত। মুসলিম শরীফে বর্ণিত কবর জিয়ারতের একটি দোয়া দেয়া হলো। দোয়াটির আরবি উচ্চারণ: “আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাত দিয়ারি মিনাল মু’মিনিনা ওয়াল মুসলিমিনা ওয়াইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকুনা ওয়াইয়ারহামুল্লাহুল মুসতাকদিমিনা মিন্না ওয়াল মুসতা’ খিরিনা নাসআলুল্লাহা লানা ওয়ালাকুমুল ‘আফিয়াহ’।”
বাংলা অর্থ: হে কবরবাসী মুমিন ও মুসলমানগণ! তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আমরাও ইনশাআল্লাহ তোমাদের সাথে মিলিত হবো। আল্লাহ আমাদের পূর্ববর্তীদের এবং পরবর্তীদের প্রতি দয়া করুন। আমরা আল্লাহর নিকট তোমাদের জন্য এবং সবার জন্য দোয়া পার্থনা করি।” (মুসলিম শরীফ-২/৬৭১, ইবনে মাজা)।
রমজান শেষে ঈদের দিন আসলে আমাদের মনে আনন্দের জোয়ার বয়। কিন্তু ওইদিনটি কবরবাসীদের জন্য আর্তনাদের ও কষ্টের দিন। কারণ ঈদের পরপরই তাদের কবরের আজাব আবার শুরু হয়ে যায়। ঈদের নামাজের পরপরই এ আজাব শুরু হয়ে যায়।
তাই রোজার প্রথম দিন থেকেই আমাদের প্রিয় মানুষগুলোর জন্য বেশী বেশী করে দোয়া করি। যাতে আমাদের বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন যারা কবরে আছে, যারা আমাদের ঈদের দিন নতুন জামা কিনে দিতো আল্লাহ্ যেন ঈদের পরও তাদের কবরের আজাব রমজান মতো বন্ধ করে দেন।
হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন- হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কবরে মৃত ব্যক্তিগণ এমনভাবে অপরের মুখাপেক্ষী হয়, যেমন পানিতে ডুবতে থাকা ব্যক্তি হয়ে থাকে। তারা পিতা-মাতা, ভাই ও অন্য লোকদের দোয়া লাভের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণে। তাদের কাছে যখন দুনিয়ার কারো দোয়া পৌঁছে, তখন সমস্ত দুনিয়াতে যা কিছু আছে তার তুলনায় সে দোয়া হয় তাদের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়।’
নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর মানুষের দোয়ার মাধ্যমে কবরবাসীকে পাহাড় সমান পূণ্য দান করেন। মৃতদের জন্য জীবিতদের উপঢৌকন হচ্ছে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা।
ভালো লাগলে শেয়ার করুন
মোহাম্মদ খলিলুর কাদেরী
Leave a Reply