আর জামা কেনার বায়না করবেনা প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তামান্না!

‘মা তোকে জামা কিনে দিতে পারলাম না। আর জামা কেনার বায়না করবে কে ! তুই কই গেলি আয় আমার বুকে আয়। তর বাবা আজ টাকা পাইছে রে মা। আজ তরে জামা কিনে দিবো রে। তুই আয়! আয়! আমার বুকে আয়’’ এমন আহাজারী কন্ঠে কথা গুলো বলছিল স্কুল পড়ুয়া প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী তামান্নার মা। মৃতদেহের পাশে বসে মা সাজেদা বেগম বার বার কথা গুলো বলতে বলতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অনেক দিন ধরেই পহেলা বৈশাখের নতুন জামা কেনার বায়না করে আসছিল প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী তামান্না। প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার সময় মায়ের কাছে জামা কেনার বায়না ধরলে আজ না, কাল জামা কেনা হবে মায়ের এমন আশ্বাসে স্কুলে ছুটে যায় সে। এভাবেই বেশ কয়েকদিন কেটে যায়। জামা কেনা আর হয় না তামান্নার।
রোববার সকালে জামা কিনে না দিলে স্কুলে যাবে না বলে বায়না ধরে বাসায় বসে ছিল তামান্না। মা সাজেদা বেগম বলে উঠলো আজ মা তোকে জামা কিনেই দিবো। তুই স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে আয়, তোকে নিয়ে তোর বাবা মার্কেটে গিয়ে নতুন জামা কিনে দিবে। এই আশায় বুক বেধে স্কুলে চলে যায় সে। আনুমানিক দুপুর দুইটার দিকে স্কুল ছুটি হওয়ার পর বাসায় ফেরার সময় সড়ক পার হতে গিয়ে দ্রুতগতির একটি ড্রাম ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ট ১৪-৪৮৮৮)’র চাপায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় স্কুল ছাত্রী তামান্না! এমন হৃদয়বিদায়ক ঘটনা ঘটে শ্রীপুর বরমী আঞ্চলিক সড়কের বরমী চৌরাস্তা নামক স্থানে।

নিহত তামান্না ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার তারবাগান গ্রামের হাকিম মিয়ার কন্যা। তার বাবা বর্তমানে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের কায়েতপাড়া গ্রামের জৈনক হানিফ মিয়ার বাড়ীতে বাড়ায় থেকে রাজ মিস্ত্রীর কাজ করেন। তামান্না স্থানীয় বরমী চৌরাস্তা মডেল একাডেমির প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্কুল শিক্ষার্থীর নিহতের জেরে বেশ কয়েকটি ড্রাম ট্রাকে ভাংচুর চালায় স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতা। এসময় প্রায় ৪ ঘন্টা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে জনতা।

শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আজিজুল হক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুদ্ধ জনতাকে বুঝিয়ে সড়কের যানচলাচল স্বাভাবিক করা হয়। ঘাতক ড্রাম ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।





Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*