গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের তুলসীঘাটে শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়াম মাঠে বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। চার দিনব্যাপী এই গ্লোবাল ভিলেজ বইমেলা শুরু হবে আগামী ২৪ মার্চ। আর শেষ হবে ২৭ মার্চ। সাহিত্য সংগঠন বিমল সরকার সাহিত্য সম্ভার ও পাঠাগারের বইমেলা উদযাপন কমিটির আয়োজনে এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রিদম অব গ্লোবাল ভিলেজের সহযোগিতায় এই বইমেলা চলবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। গত বছর একই স্থানে একই মাসে তিন দিনব্যাপী বইমেলার আয়োজন করে একই আয়োজনকারী সংগঠন।
বিমল সরকার সাহিত্য সম্ভার ও পাঠাগার সূত্রে জানা গেছে, ১৩টির বেশি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন বইমেলায় স্টলের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে। সেগুলো হলো- জামান অনলাইন বুকশপ, স্বপ্নচূড়া পাঠাগার, কালের চিঠি প্রকাশন, প্রথম আলো গাইবান্ধা বন্ধুসভা, জ্ঞান অর্জন পাঠাগার, সৃজনশীল গাইবান্ধা, লেখিকা নাসরীনরেখা গ্রন্থাগার, অভিপ্রায় সংঘ, তুলসীঘাট যুব উদ্যোগ সংগঠন, ফুলকুঁড়ি বই ঘর, সুলতানা রাজিয়া পাঠাগার, স্বপ্নকানন ও ইকরা অনলাইন বুক শপসহ আরও কয়েকটি রয়েছে। বইমেলায় থাকবে ছোটদের মজার মজার ছড়া, কবিতা ও গল্পের বই। থাকবে ধর্মীয়, বিজ্ঞান, গোয়েন্দা কাহিনী, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, ছড়া, গল্প, স্বাস্থ্যসহ নানান ধরনের নবীন-প্রবীণ বিভিন্ন লেখকের বই। বইমেলায় মোড়ক উন্মোচন করা হবে নতুন কাব্যগ্রন্থের।
সেভ দ্যা চিলড্রেনের গাইবান্ধা জেলা ভলান্টিয়ার মো. তাওহীদ তুষার বলেন, আজকাল শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছে। তারা প্রয়োজনের বাহিরে অতিরিক্ত সময় ধরে গেমস ও ভিডিও তৈরির অ্যাপসসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেতে থাকে। ফলে তারা বইবিমুখ হয়ে পড়ছে। এতে করে দৃষ্টিশক্তিসহ বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছে শিশুরা। তারা পড়াশোনায় মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে। ফলে শিশুদেরকে বইমুখী গড়ে তুলতে হলে শিশুদের বইমেলায় আনতে হবে। তাদের পছন্দের বই কিনে দিতে হবে। আর তা শিখবে পরিবারের অন্যদের বইপড়া দেখে। তাই বড়দেরও বইপড়া উচিত বলে মনে করেন তাওহীদ তুষার।
বইমেলা প্রসঙ্গে শব্দ প্রকাশনীর প্রকাশক ও সম্পাদক কবি সরোজ দেব বলেন, ভাষার মাস চলে গেল। অথচ একটি জেলায় না হলো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় না হলো বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কোন বইমেলা। বিমল সরকার সাহিত্য সম্ভার ও পাঠাগার দ্বিতীয়বারের মতো বইমেলার আয়োজন করায় তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। এ ধারা তারা অব্যাহত রাখুক।
বইমেলায় পাঠক উপস্থিতি বাড়ানো প্রসঙ্গে গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরী অ্যান্ড ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জনি বলেন, বইমেলার বিষয়টি গাইবান্ধার সাত উপজেলার প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দিলে বইপ্রেমী মানুষের পদচারনায় মুখরিত হবে মেলা প্রাঙ্গন।
বিমল সরকার সাহিত্য সম্ভার ও পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক শামীম সরকার জানান, যুব সমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা, বহু মতের বৈষম্যের পরিবেশে ভ্রাতৃত্ববোধের সৃষ্টি এবং ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির সুস্থ্য চর্চার প্রত্যয় নিয়ে এ বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, নতুন প্রজন্মের সাহিত্য ভাবনাকে মাথায় নিয়ে আলোকিত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে বইমেলার আয়োজনের ব্রতী হয়েছি। যা মেধা বিকাশে সৃজনশীল মানুষ গঠনে ভূমিকা রাখবে এবং অনেকে হাতের কাছে পাবে নতুন নতুন বই। ইচ্ছা থাকলেও যারা হাজারো বিড়ম্বনায় ঢাকার বইমেলায় যেতে পারেননি। তারা গাইবান্ধার এই বইমেলায় সেই আবহ কিছুটা হলেও পাবেন বলে জানান বিমল সরকার। তাই বইমেলায় স্বপরিবারে আসার তাগিদ দেন তিনি।
Leave a Reply